Monday, November 11, 2013

পাশের মানুষ

দক্ষিণের জানলাটার পাশে সাততলা বাড়ি উঠছে।
সারাদিনের খুনসুটি এখন বাজারের ফর্দে সীমিত।
বৃষ্টির জলে কাগজের ভাঁজের ডিঙ্গি ভাসাইনি কতদিন,
মুঠোফোনে কেবল নিয়মের কুশল বিনিময়।

তবু শেষরাতে মন সেই বাড়ি ফেরে,
আধঘুমে হাত খোঁজে পাশের মানুষ।
তবু যে রাতে সে শুতে আসেনি, ছুঁতে চায়নি,
পরদিন বৃষ্টি নেমেছিল, কপালে তাও ভাঁজ পড়েনি!

Wednesday, July 3, 2013

নামহীন

তুমি কি সশস্ত্র বিপ্লবে গিয়েছিলে?
শিল্পবিপ্লবের দিনে টেনেছিলে হাপর?
খনিগর্ভ থেকে কখনও তুলে এনেছো কয়লার চাঙড়?
রাজতন্ত্র, ধর্মের শাসন বা পুঁজিবাদের প্রতিবাদে
এসে দাঁড়িয়েছ কি সামনের সারিতে?
নাকি শুধু বিপ্লবের এঁটো মুছে স্বাধীনতার পাত-কুড়ুনি পেয়েছ?

এবার কি নিজের হাতে তুলে নেবে ভুবনের ভার?
নাকি এখনও প্রতি সকালের শিরোনামে নামহীন ভিকটিম হবে?

Tuesday, April 2, 2013

সূর্যাস্তের বিপরীতে

বিদায়বেলায় আর চোখ ভিজে আসে না আজকাল। বিকেলের ডানায় ভর দিয়ে আমি যেই দ্রুত অন্ধকারের দিকে এগিয়ে যাবো, তুমি বাড়ি ফিরে দেখো আমার খানিকটা ফেলে এসেছি জানলার ধাপে। আমি চেয়েছিলাম আমার সেইটুকু ওখানেই বেঁচে থাক, কিন্তু তোমার হয়ত প্রয়োজন ছিল না। তাই শেষ দিনে আমি সূর্যাস্তের বিপরীতে ছুটে যাই আমার ক্রমশ ছোট হয়ে আসা বিকেল আর ছোট ছোট ভালোলাগাগুলোর কাছে। তুমি তোমার দীর্ঘতর দিন আর ট্রাফিকের বিষন্নতায় জড়িয়ে রইলে।

এভাবেই আমাদের দ্বিখণ্ডিত বেঁচে থাকাগুলো কুড়িয়ে নিয়ে, জড়ো করে, একটা জীবন গড়ি আমরা। আবার কখনো হয়ত সেই গতবারের টুকরোগুলো পকেটে ভরে পৌঁছে যাব তোমার কাছে, আবার সেখান থেকে শুরু করতে চেয়ে, যেটুকু অসম্পূর্ণ রেখে ফিরে গিয়েছিলাম সেবার।

Tuesday, March 12, 2013

রাত-পোড়া ছাই

আমার রাত-পোড়া ছাই, সকাল হলেই
আমি সরিয়ে রাখি, চাপা দিই
কাগজের স্তূপে, প্রতিদিন।

যেভাবে প্রেমিকের অবহেলা অভ্যেসে পরিণত হয়,
যেভাবে আমার পাশে বসা সহযাত্রীটি ততবার
আরো, আরো কাছে ঘেঁষে আসে, যতবার
আমি ছোঁয়া এড়িয়ে সরে যেতে চাই;

সারাদিনের ধুলোবালি মুছে ফেলে, সেভাবেই
আমি রাত্রিতে প্রবেশ করি,
অনেক রাতে, প্রতিরাতে।

Thursday, February 21, 2013

বসন্ত পঞ্চমী

অনভ্যস্ত শাড়ির কুঁচিতে
প্রাপ্তবয়স্ক মন চিরশিশু হয়ে যাক।

বইয়ের ফাঁকে শুকনো ফুলের
নিঃশর্ত সমর্পণে
আমাদের ছেলেবেলা আলো হয়ে থাক!

Thursday, January 3, 2013

নেই শহর

এই শহরে ধর্ষিতা নেই।
পেশাগত বচসা আছে, পারিবারিক বিবাদ আছে,
ধর্ষিতা নেই।
মিছিল আছে, মোমবাতি আছে, মোসাহেব আছে,
মেরুদন্ড নেই।
কবির প্রেমে ছন্দ মিলুক, তর্ক চলুক অর্থনীতির,
রিমেক-গীতির, টেগোর-প্রীতির।
মোহনবাগান, কাজের যোগান,
ভিন প্রদেশের পাথর খাদান,
শ্রেনীশত্রু নিপাত যাক!
এখানে কোথাও শত্রুতা নেই।

নেই শহরে ধর্ষিতা নেই,
স্বার্থ-লাঙ্গলে কর্ষিতা নেই,
বঞ্চনা নেই, লাঞ্ছনা নেই,
আমার ভুলের মার্জনা নেই।